১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বার বার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পালা বদলে ব্যবসায় উদ্যাগ বিষয়ে কোনাে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন সম্ভব হয় নাই। পরবর্তীতে অর্থাৎ আশির দশকে এসে রাষ্ট্র যখন বেসরকারিকরণ অর্থনীতিকে স্বাগত জানায়, তখন থেকেই মূলতঃ ব্যবসায় উদ্যোগ ও উদ্যোক্তা বিষয়টি গুরুত্ব পায়।ফলে ধীরে ধীরে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে এর কাঠামােগত পরিবর্তন আসে। রাষ্ট্র এ শিক্ষার প্রতি বেশ গুরুত্ব আরােপ করে এবং এ শিক্ষার উন্নয়নের বেশ কিছু প্রণােদনামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
বাংলাদেশের মত জনবহুল ও উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও | কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এ ইউনিটে আমরা ব্যবসায়ের উদ্যোগ ও উদ্যোক্তার ধারণা, উদ্যোক্তার গুণাবলি, বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যবসায় উদ্যোক্তার অবদান, ব্যবসায় উদ্যোগ গড়ে ওঠার অনুকূল পরিবেশ, বাংলাদেশে ব্যবসায় উদ্যোগ উন্নয়নে বাধা ও সমাধান জানতে পারব।
৭ম-৮ম ও ৯ম সপ্তাহের ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম ও ৯ম শ্রেণির অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান দেখুন
৯ম সপ্তাহের – নবম শ্রেণির পদার্থ বিজ্ঞান এসাইনমেন্ট সমাধান ২০২১
ষষ্ঠ-৬ষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান ৯ম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ২০২১
৯ম সপ্তাহের – নবম শ্রেণির পদার্থ বিজ্ঞান এসাইনমেন্ট সমাধান ২০২১
নবম শ্রেণি বাংলা অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ | ৮ম সপ্তাহ
নবম শ্রেণি গার্হস্থ্য বিজ্ঞান অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ | ৮ম সপ্তাহ
৬ষ্ঠ শ্রেণি চারু ও কারুকলা অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ | ৮ম সপ্তাহ
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যবসায় উদ্যোগের অবদান/গুরুত্ব:
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলাের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে উদীয়মান বাঘ হিসেবে খ্যাত। বিশ্বের নামকরা অর্থনীতিবিদগণ বলেছেন দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়নে অমিত সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশের মােট জাতীয় উৎপাদনের সিংহভাগ সেবা ও কৃষি খাত থেকে আসলেও শতকরা ৩০ ভাগ আসে শিল্প খাত থেকে। সেই দেশকে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশ বলা হয়, যার মােট জাতীয় উৎপাদনের বেশির ভাগ আসে শিল্প খাত থেকে। ব্যবসায় উদ্যোগের মাধ্যমে শিল্প খাতসহ সকল খাতের উন্নয়ন সম্ভব । ব্যবসায় উদ্যোগ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের যেভাবে ভূমিকা বা অবদান রাখে তা নিম্নরূপ:
১। সম্পদের সদ্ব্যবহার: দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ ও মানব সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করে ব্যবসায় উদ্যোগ দেশে নতুন নতুন ব্যবসায় গঠন ও শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে।
২। মূলধন গঠন: মূলধন ছাড়া কোনাে প্রতিষ্ঠান গঠন বা নতুন কিছু উৎপাদন সম্ভব নয়। ব্যবসায় উদ্যোগ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ও বিচ্ছিন্ন সঞ্চয়কে একত্রিত করে মূলধন গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৩। জাতীয় উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধি: ব্যবসায় উদ্যোগের মাধ্যমে দেশে মােট দেশজ উৎপাদন [Gross Domestic Product (GDP)] ও মােট জাতীয় উৎপাদন [Gross National Product (GNP)] বৃদ্ধি পায়। ফলে, মােট জাতীয় আয় (Total National Income) বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি মাথা পিছু আয়ও (Income Per Capita) বৃদ্ধি পায়।
৪। কর্মসংস্থান সৃষ্টি: বর্তমান উন্মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে সরকারের পুরােপুরি কর্মসংস্থানের দায়িত্বভার নেয়ার সুযােগ নেই। বরং রাষ্ট্র এরূপ সহায়ক ভূমিকা পালন করে যাতে দেশে বেসরকারি মালিকানায় নতুন নতুন শিল্প কল-কারখানা, ব্যবসায় ইউনিট গড়ে উঠে এবং নিত্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযােগ সৃষ্টি হয়। আর এটা ব্যবসায় উদ্যোগ ছাড়া সম্ভব নয়।
৫। দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি: বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। ব্যবসায় উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের অদক্ষ জনগােষ্ঠীকে Activate উৎপাদনশীল কাজে বিনিয়ােজিত করে দক্ষ মানব সম্পদে রূপান্তর করা যায়। জাপান এর একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
৬। পরনির্ভরশীলতা হ্রাস: যে সকল পণ্য ও সেবাকর্ম বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়, ব্যবসায় উদ্যোগের মাধ্যমে শিল্প, কল-কারখানা ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনা করে ঐ সকল পণ্য ও সেবাকর্ম উৎপাদন করে পরনির্ভরতা দূর করা যায়।
৭। শিল্পোন্নয়ন: ব্যবসায় উদ্যোগের অর্থাৎ দক্ষ ও সৃজনশীল উদ্যোক্তাদের দ্বারাই নতুন নতুন ব্যবসায় সংগঠন স্থাপন, পণ্য ও সেবাকর্ম উৎপাদন এবং আধুনিকায়নের মাধ্যমে শিল্পোন্নয়ন ঘটে থাকে।
৮। বিনিয়ােগ বৃদ্ধি: ব্যবসায় উদ্যোগের দ্বারা দেশে এরূপ ব্যবসায় বান্ধব পরিবেশ তৈরি হয়, যার ফলে দেশি বিদেশি বিনিয়ােগকারী নতুন নতুন প্রকল্পে বিনিয়ােগ করে।
৯। পরিবহণ ও যােগাযােগ ব্যবস্থার উন্নয়ন: ব্যবসায় উদ্যোগের কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পরিবহণ ও যােগাযােগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়।
১০। প্রযুক্তির উন্নয়ন: প্রযুক্তি সতত পরিবর্তনশীল। উন্নত গবেষণার মাধমে ব্যবসায় উদ্যোগ বা উদ্যোক্তা ক্রমাগতভাবে লাগসই প্রযুক্তি সংগ্রহ ও ব্যবহার করেন। ফলে দেশের প্রযুক্তির বিকাশ ও উন্নয়ন হয়ে থাকে।