দিবস

বিজয় দিবসের কবিতা ২০২২। মহান বিজয় দিবসের কবিতা

বিজয় দিবসের কবিতা ২০২২। মহান বিজয় দিবসের কবিতা: বছর পেরিয়ে আবারো আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছে মহান বিজয় দিবস। এক্ষেত্রে আপনাদের সকলকে মহান বিজয় দিবসের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। বাংলাদেশের ইতিহাসে আনন্দের ও গৌরবের একটি দিন হচ্ছে এই 16 ডিসেম্বর। ১৬ ডিসেম্বর কে কেন্দ্র করে রয়েছে অনেক স্মৃতি এর মধ্যে অনেক স্মৃতি রয়েছে যেগুলো আনন্দের আবার অপরদিকে এই স্মৃতির গভীরে রয়েছে হাহাকার কষ্ট দুঃখের কথা। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় অর্জন করি আমরা। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ চলার পরবর্তী সময়ে বিজয় লাভ করার আনন্দ অনুভূতিগুলো প্রকাশ করার জন্যই এই বিজয় দিবস। দীর্ঘ দিন পরেও এই দিনটিকে আগ্রহের সাথে উদযাপন করে থাকেন বাংলাদেশের সকল স্তরের মানুষজন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অফিস আদালত থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রে স্বাধীনতা দিবসের বিভিন্ন বিষয়ের লক্ষ্য করে থাকি আমরা।

তাইতো এই বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে মানুষের এত আগ্রহ উল্লাস এই দিনটিকে কেন্দ্র করে কিছু কবিগন লিখেছে তাদের কবিতায় অনেক ধরনের কথা। আর তাদের এই সুন্দর ছোট বড় কবিতাগুলো আপনাদের মাঝে প্রকাশ করার আগ্রহ নিয়েই আজকের ওয়েবসাইট। আমাদের সাথে থেকে মহান বিজয় দিবসের স্মৃতি আবেগ ভালোবাসা আনন্দ উল্লাস এর মধ্য দিয়ে লেখা এই কবিতাগুলোই আপনাদের মাঝে তুলে ধরব। আমাদের দেশে অসংখ্য মানুষ রয়েছেন যারা কবিতা ভালোবাসে পছন্দ করেন। মূলত এমন ব্যক্তিদের উদ্দেশ্য করেই আজকের আলোচনা আলোচনা সাপেক্ষে আপনাদের মাঝে তুলে ধরব বিজয় দিবসের সুন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু কবিতা।

বিজয় দিবসের কবিতা ২০২২

প্রতিবছর বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে ছোট বড় অনেক কবিতা লেখা হয়। তবে অনেক কবিতায় প্রকাশ পায় না অন্যের মাঝে। এক্ষেত্রে বেশ কিছু সুন্দর ও নতুন কবিতা গুলো আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে আজকের এই আলোচনা। আলোচনা সাপেক্ষে আপনাদের সকলের উপস্থিতি কামনা করছি আমরা আমাদের আলোচনায় নির্বাচিত কিছু কবিতা তুলে ধরব যা অবশ্যই আপনারা পড়বেন। এমন আনন্দের দিনে মজার সুন্দর ও আকর্ষণীয় এই কবিতাগুলো পড়তে পারেন আপনি পাশাপাশি অন্যকে করার সুযোগ করে দিতে পারেন। অনেকেই রয়েছেন সুন্দর এই কবিতাগুলো থেকে কিছু লাইন সংগ্রহ করার মাধ্যমে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা বার্তা কিংবা স্ট্যাটাস হিসেবে ব্যবহার করেন। এমনটা করতে পারেন আপনিও। নিচে বিজয় দিবসের কবিতা গুলো তুলে ধরেছি।

বিজয় দিবস
( মাশায়েখ হাসান )

৭১’এর এই দেশেতে
হানাদার হানা দেয়।
দেশকে স্বাধীন করতে বাঙ্গালী
অস্ত্র তুলে নেয়।

৭১’এর এই দিনেতে
হয় সীমাহীন যুদ্ধ।
যার কাহিনী শুনলে মোদের
শ্বাস হয়ে যায় রুদ্ধ।

৩০ লক্ষ শহীদ আর
মা-বোনের বিনিময়।
স্বাধীন বাংলাদেশ এর ঘটে
উদার অভ্যূদয়।

বিজয়ের দিন
( তাসনিয়া আহমেদ )

বাংলাদেশে পাক-শাসনের আসন যেদিন টলে,
সেদিনটাকে আজকে সবাই ‘বিজয় দিবস’ বলে।
বিজয় কিন্তু অনেক দামী; সহজলভ্য নয়।
মুক্তিসেনা বিজয় আনে জয় করে সব ভয়।

লাল সবুজের পতাকাটার আজকে খুঁটি শক্ত;
আনতে সেটা,বীর সেনারা দিয়েছিলো রক্ত।
বাংলা মায়ের বীর ছেলেরা ভয় পায়না মোটে।
তাদের ত্যাগে মোদের মুখে বিজয় স্লোগান ফোটে।

বিজয় দিবস রক্তে ধোয়া,বীর শহীদের স্মৃতি।
বিজয় নিয়েই আজকে লেখা-কবিতা আর গীতি।
বিজয় মাখা ফুলে-পাতায়,বিজয় সবুজ ঘাসে।
বছর ঘুরে এদিন যেন বারে বারে আসে!

পাগলী মা’টা
( জনি হোসেন )

ফিরে এল বিজয় দিবস
নেইতো খোকা ঘরে,
সেই যে গেল আর এলোনা
যুদ্ধে একাত্তরে।

স্বপ্ন বোনে পাগলী মা’টা
ফিরবে খোকা কবে,
ফুলেল মালা গলে দিবে
ফুল ঝরে যায় টবে।

ছেলে আসবে,আসবে ছেলে
পাগলী মা’টা চ্যাঁচায়,
পাগলী মা’টা রুক্ষ সুক্ষ
যত্ন নিতে কে চায়?

প্রতিবারে বছর শেষে
বিজয় যখন আসে,
ছেলে হারা পাগলী মা’টা
দাঁত খিলিয়ে হাসে।

১৬ ই ডিসেম্বর
( তানজিম এ আল আমিন )

বছর ঘুরে আবার এলো ষোলই ডিসেম্বর
বিজয় গানে উঠলো মেতে মানুষ আপামর।

একাত্তর এর সেই সে বিজয়
করলো স্বাধীন সকল হৃদয়
শোষন ত্রাসন করলো বিদায়
করলো নতুন সূর্য উদয়

সেই সূচনায় আমরা সবাই স্বাধীন নিরন্তর,
বছর ঘুরে আবার এলো ষোলই ডিসেম্বর।

১৬ই ডিসেম্বর
( অন্তু সরকার প্রণব )

১৬ই ডিসেম্বর এলে
মনটা আমার কেমন কেমন করে
সোনার ছেলেরা যে যুদ্ধে গিয়ে
আর ফেরেনি ঘরে।

পাক হানাদারদের ওই হাতে
মরলো মানুষ দিনে রাতে
দেশের জন্য জীবন দিয়ে
শহীদ হলো তারা তাতে।

নয় মাস যুদ্ধ করে
সব হানাদার হলো শেষ
সৃষ্টি হলো এক নতুন দেশের
দেশের নামটি বাংলাদেশ।

এই বিজয়ের মাঝেও যে
অনেক কষ্ট আছে
জীবন দিয়ে লাখো মানুষ
শহীদ হয়ে গেছে।

৪২ বছর পরে এসে
ষোলই ডিসেম্বরে
দেশকে মোরা কী দিয়েছি
দেখি হিসাব করে।

দেশের মানুষ থাকুক ভালো
মিলিয়ে কান্না হাসি
আসো সবাই একটু হলেও
দেশকে ভালোবাসি।

বিজয় ডিসেম্বর
( সিফাত আহমেদ )

লাল সবুজের স্মৃতি ঘেড়া নিশান আমার উড়ে।
কিনেছিলাম রক্ত দিয়ে বিজয় ডিসেম্বরে।
মাগো তোমার চোখের জলে,
জয় বাংলা ধ্বনি তুলে,
হাজার ছেলে প্রাণ দিল ঐ নতুন আশার ভোরে।
রক্ত দিয়ে কেনা এই বিজয় ডিসেম্বরে।

মাগো তুমি হায়েনা ভয়ে কাঁদছ দেখে তাই।
তোমার ছেলে ঘর ছেড়েছে তোমায় দিতে ঠাঁই
বিশ্বমাঝে উচ্চাসনে,
পাক বাহিনীর নির্যাতনে,
আর হবেনা শোষন এবার তোমার আপন ঘরে।
রক্ত দিয়ে কেনা এই বিজয় ডিসেম্বরে।

 

বিজয় দিবস কবিতা

সবাইকে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা

পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে

পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে

রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল

জোয়ার এসেছে জন-সমুদ্রে

রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল।।

বাঁধন ছেঁড়ার হয়েছে কাল,

হয়েছে কাল, হয়েছে কাল।।

শোষণের দিন শেষ হয়ে আসে

অত্যাচারীরা কাঁপে আজ ত্রাসে

রক্তে আগুন প্রতিরোধ গড়ে

নয়া বাংলার নয়া শ্মশান, নয়া শ্মশান।

আর দেরি নয় উড়াও নিশান

রক্তে বাজুক প্রলয় বিষাণ

বিদ্যুৎ গতি হউক অভিযান

ছিঁড়ে ফেলো সব শত্রু জাল, শত্রু জাল।

 

বিজয় দিবসের ছোট কবিতা 

 

১৬ ই ডিসেম্বর
তুমি বাঙালির অহংকার
তুমি কোটি জনতার,
বিজয় নিশান
স্বাধীন বাংলার স্বাক্ষর ।
১৬ই ডিসেম্বর
তুমি মহা বিজয়ের মহা উল্লাস
তুমি বিধবা মায়ের
বন্দী শ্বাসের শান্তির নিঃশ্বাস ।

১৬ই ডিসেম্বর

তুমি দুঃখিনী মায়ের দুঃখ ভোলানো
সুখের হাসি,
তুমি ছেলে হারা পিতার
শোক কাটানো শ্যামল গাঁয়ের,
রাখাল ছেলের
দুঃখ সুরের বাঁশি ।
১৬ই ডিসেম্বর
তুমি নিহত মুক্তিসেনার
কান্নাভেজা চোখে
চির প্রশান্তির পরশ,
তুমি শহীদ পিতার
ছোট্ট শিশুর
হৃদয় রাঙানো মুক্তি হরষ ।

১৬ই ডিসেম্বর

তুমি অগ্নি গর্ভা বাংলার
লাখো শহীদের বুকের
রক্তেভেজা সুশীতল বিছানা,
যাদের ত্যাগের বিনিময়ে পেলাম
মা,মাটি, দেশ
চির শান্তির ঠিকনা।
১৬ই ডিসেম্বর
তুমি ১৬ কোটি মানুষের
চলার পথের উৎস প্রেরনার,
তুমি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা
প্রতিটি বাঙালির গর্ব
দুঃখ-সুখের অনুরণ স্বপ্নীল বাসনার ।

১৬ই ডিসেম্বর

তুমি ৯ মাসের
বেদনায় মোড়া স্মৃতিকাতর
লৌহ কঠিন নির্মম অতীত,
তোমার কাছেই পেয়েছে শিক্ষা
বর্তমান প্রজন্ম,
পরাধীনতার শৃঙ্খল পেরিয়ে
কি করে ভাঙতে হয়
শোষণকারীর ভীত ।

১৬ই ডিসেম্বর

তুমি রক্তস্নাত স্মৃতিসৌধ
বিশ্বের বিস্ময়,
ত্রিশ লক্ষ শহিদের ত্যাগে
আমরা করেছি জয় ।
লাল সবুজ পতাকার চিহ্ন
বক্ষে করে ধারন,
প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম
বাংলাদেশের মানচিএ
অটুট রাখতে
হাসিমুখে বিলিয়ে দেবে প্রাণ ।

১৬ই ডিসেম্বর
তুমি নও শুধু একটি তারিখ
নও একটি স্মৃতি চিহ্ন,
তুমি লাখো শহীদের রক্তের প্রতিক
তুমি চির বঞ্চিতের রনহুংকার,
আবার তুমিই দিয়েছ চির শান্তি
৩০ লক্ষ শহীদ আত্মার ।

১৬ই ডিসেম্বর
তুমি একটি উজ্জ্বল নক্ষএ
বাংলা মায়ের আকাশ পাড়ে,
তোমার জন্যই আজি
বইছে আনন্দ, উল্লাস
স্নেহমাখা বাংলার হৃদয় জুড়ে ।
১৬ই ডিসেম্বর
তুমি গৌরবদীপ্ত বিজয়ের
মঙ্গল বারতা,
তুমি স্নিগ্ধ কোমল
ছোট্ট শিশুর ইচ্ছেমতি খেলা
তুমি রক্তাক্ত বীরঙ্গনার
রক্তখচিত বিজয় নিশান
স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা ।

১৬ই ডিসেম্বর
তুমি কৃষকের বুকে
শস্য-শ্যামল ফসলি জমির বেষ,
তুমি কৃষাণীর হাতে
মিষ্টি গন্ধে ভরা
মুঠো মুঠো সোনালী ধানের শীষ ।
তুমি আনন্দের,তুমি কান্নার
তুমি চির শান্তির
তুমি অগ্নিঝরা বিজয় উচ্ছ্বাস
১৬ কোটি বাঙালির
প্রানের উৎসব
বিজয় দিবস ।

মহান বিজয় দিবসের কবিতা

মহান বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে ছোট বড় কবিতা লেখা কবিতাগুলোই তুলে ধরছি ইতিপূর্বে এখানেও কিছু কবিরা দিয়ে সহযোগিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করছি। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুন্দর ও ছন্দের মাধ্যমে লিখিত কবিতাগুলোই তুলে ধরছি আপনাদের মাঝে। আপনাদের সহযোগিতা করার উদ্দেশ্য নিয়েই মহান বিজয় দিবসের লেখা সুন্দর আকর্ষণীয় এই কবিতাগুলো পড়তে পারেন আপনিও।

লাল সবুজের স্মৃতি ঘেরা নিশান আমার উড়ে।

কিনেছিলাম রক্ত দিয়ে বিজয় ডিসেম্বরে।

মাগো তোমার চোখের জলে,

জয় বাংলা ধ্বনি তুলে,

হাজার ছেলে প্রাণ দিল ঐ নতুন আশার ভোরে।

রক্ত দিয়ে কেনা এই বিজয় ডিসেম্বরে।

মাগো তুমি হায়েনা ভয়ে কাঁদছ দেখে তাই।

তোমার ছেলে ঘর ছেড়েছে তোমায় দিতে ঠাই

বিশ্বমাঝে উচ্চাসনে,

পাক বাহিনীর নির্যাতনে,

আর হবেনা শোষণ, এবার তোমার আপন ঘরে।

রক্ত দিয়ে কেনা এই বিজয় ডিসেম্বরে।

এসো খোকা এসো খুকু

ঘুমিয়ে থেকো না আর

তাকিয়ে দেখ সম্মুখে তোমার

মুক্ত আলোর দুয়ার।

চলো খোকারা চলো খুকুরা

হও প্রাণ উচ্ছল

জাতি হিসেবে স্বাধীন তোমরা

রেখো দৃঢ় মনোবল।

তোমাদের পিতা তোমাদের মাতা

ছিলো এ দেশেরই সন্তান

স্বাধীন করতে এ দেশ তারা

করেছেন জান কোরবান।

তাদেরই আশিস পেয়েছো তোমরা

গড়ে তুলবে এ দেশ

সাজিয়ে দিও বাংলাদেশেরে

প্রাণ করে নিঃশেষ।

 

যখন সুখ মানে,দেখছি অনাহারে কোটি মানুষের দিন কাটছে অনিদ্রায়

যখন স্বাধীনতা মানে,কোটি মানুষ কাঁদছে পরাধীনতায়

এ দেশ ভুল পথে বিকৃত,ভাঙ্গা হাতে লাঞ্ছিত,কৃষকের স্বপ্ন ধূসর,বিবর্ণ

যখন রাজনীতি মানে,হাজার প্রতিশ্রুতি,আর স্বপ্ন দিন বদলের

যেখানে গনতন্ত্র মানে রাজপথে ছুটে চলা নীল মার্সিডিস

যখন প্রতিবাদ মানে দাউ দাউ করে জ্বলছে মানুষের লাশ

যখন আন্দোলন মানে টকশোতে দুটো গালি শুনে,রাজনীতির মুন্ডুপাত

আর হাসি মুখে মেনে নেয়া শত অবিচার

যখন ক্ষণিকের দেশপ্রেম থেকে বিজয় মিছিল স্মৃতিসৌধে

আর প্রতিজ্ঞা,দেশকে ভালোবাসার

তখন চলুক,যেমন চলেছে………..

 

শাহনেওয়াজ চৌধুরী

দেশ আমার, মাটি আমার

 

এখানে মাটির মায়ায় ঘুমিয়ে আছে শহীদের প্রাণ

হাজারো পাখি ডাকে, বুকে রাখা ফুলের ঘ্রাণ,

এখানে নদীরা ছোটে বুকে তার নীল নীল ঢেউ

কত যে সুখের সুর, খালি হাতে ফেরে না তো কেউ।

এখানে সগৌরবে কন্যা চায় জনকের চোখে

সম্ভ্রম হারানো নারী বেঁচে আছে সহস্র শোকে,

শোক আসে, শোক যায়; বেঁচে থাকে মাটির মায়া

দেশ আমার, মাটি আমার মমতার অপার ছায়া।

 

জামসেদ ওয়াজেদ

পিঁপড়া কাহিনী শেষে

 

বিমূর্ত সকাল এক বয়ে আনে শীত আর অতীত কাহিনী

তখনও বারুদ ঘ্্রাণে কেঁপেছিল এ ভূমির শতত পরত

পিঁপড়া কাহিনী শেষে জেগে ওঠে ঘোড়াশালা আর ঐরাবত

আরো জাগে এ ভূমিতে কৃষাণ যুবক বৃদ্ধা আমার বাহিনী

পিতার পায়ের ছাপ দেখে দেখে কত বীর দিয়ে গেছে প্রাণ

দেখবে দেখবে বলে কেবলি একটি ফুল সাজানো বাগান

ফুটেছিল সেই ফুল গেয়েছিল শুকপাখি বিজয়ের গান

ভূমিতে রক্তের দাগ সোঁদা মাটি এঁটেলে তো তারই প্রমাণ

আমার শহর থেকে আজকাল চুরি হয় দিনের আলোরা

আমাদের হস্তরেখা বোঝে না তো বিশেষজ্ঞ জ্যোতিষী প্রখর

সম্মানিত চোরগণ বিজয় শরাব খায় ঠিক অতঃপর

তফাত বোঝে না আজো এ ভূমিতে বাস করা সাদা ও কালোরা

তবুও বিজয় তুমি বারবার ফিরে এসো আমাদের হাতে

আমরা তোমাকে চাই সাহস ও বস্ত্রহীন শীতের প্রভাতে.

বিজয় কেতন

 

কিচিরমিচির পাখির সুরে উঠোন কোণে বসে

রোজ সকালে খোকন সোনা রঙের হিসাব কষে।

শিশির ভেজা মিষ্টি রোদের মায়ার পরশ মেখে

কিসের ছবি খোকন সোনা যাচ্ছো শুধুই এঁকে!

খোকার হাতে সবার চেনা দুইটা প্রিয় রঙ

কিন্তু মায়ের হয় না বোঝা খোকন সোনার ঠঙ।

ছবির আঁচড় দেখতে কেমন? ঠিক গোলাকার ডিম

তার উপরে আয়তক্ষেত্র দেখেই শরীর হিম!

খোকন সোনা মায়ের চোখে ক্যামনে দেবে ফাঁকি

কিসের ছবি বুঝতে মায়ের রইলো না আর বাকি।

ছবির গঠন দেখেই মায়ের চাঁদের হাসি গালে

কিসের ছবি? বিজয় কেতন সবুজ এবং লালে।

 

ঘুঘু পাখির বিজয়

একটি ঘুঘুর দুইটা ছানা তিড়িং বিড়িং নাচে

দূরের বনে বসতি তাদের শিউলী ফুলের গাছে।

হাসতো রোজই খেলতো রোজই ঘুরতো তারা বনে

বনটা তাদের মায়ের মতোই ভাবনা পুষে মনে।

একদা বনে আসলে শকুন করলো আদেশ জারি

থাকতে বনে রাখবে মনে আমার হুশিয়ারি।

কিন্তু ঘুঘুর বাচ্চা দুটো ভীষণ প্রতিবাদী

থাকবো নাকো রাজার শানে, এক কথা এক দাবি।

শুনেই শকুন চমকে উঠে দেখবো বেটা নবাব

রক্ত আগুন বুলেট ছুড়ে দিবোই কথার জবাব।

দেখবি তখন বুঝবি বাছা মরার কেমন সাধ

ঘুঘু ছানার কণ্ঠে তবু জয়ের প্রতিবাদ।

কিন্তু মায়ের হাজার-বারণ হৃদ মাজারে ভয়

ঘুঘু ছানার কণ্ঠে তবু জয় বাংলা জয়।

ছেলের মায়া প্রাণের মায়া আজকে মাগো থাক

বনটা জুড়ে রক্ত আগুন যুদ্ধে যাবার ডাক।

এমনি করে ঘুঘুর ছানা জয়ের মুকুট পরে

যুদ্ধ শেষে বীরের বেশে ফিরলো মায়ের ঘরে।

সেদিন থেকেই ওই পতাকা লাল-সবুজে আঁকা

বিজয় তুমি দেশ ও জাতির স্বপ্ন কাজলমাখা।

১৬ই ডিসেম্বর নিয়ে কবিতা | বিজয় দিবস কবিতা

ঘুম ভাঙ্গে রোজ

-সাজজাদ হোসাইন খান

বেগুন ফুলে প্রজাপতির হাসি

কোথায় আছে এমন মজার বাঁশি

ভর দুপুরে রাখালিয়া বাজায় হেসে হেসে,

ধানের ক্ষেতে টিয়া পাখির মেলা

আসমানে যার নীল ধবলের ভেলা

হেলে দুলে জমায় পাড়ি, পাহাড় ঘেঁষে ঘেঁষে।

জোছনা মাখা চাঁদের সাদা ডিম

রাত নিশীথে ঝরায় কেমন হিম

সিক্ত করে ফুলপরীদের রঙিন যত পাখা,

অনেক ভোরে সূর্যমামা হাঁটে

উদাস করা যোজন যোজন মাঠে

সাতটি রঙের চেরাগ যেন উপুড় করে রাখা।

সরষে ফুলে হলদে হিরণ নাচে

কোন সে দেশের এমন শোভা আছে

রূপেতে যার হাজার কবি শব্দেরই জাল বোনে,

মন উড়ে যায় মাছরাঙাদের ভিড়ে

পাতার ফাঁকে টুনটুনিদের নীড়ে

ঘুম ভাঙে রোজ মুয়াজ্জিনের দরাজ গলা শুনে।

স্বাধীনতার ঋণ

-রওশন মতিন

বিজয় রথে আসাদের শার্টে উড়িয়ে নিশান,

দুঃশাসনকে রুখে দিতে প্রতিবাদের ঐক্যতান।

এদেশটা কার, উত্তাল বাংলা জাগ্রত জনতার,

বীর ইসা খাঁ, সূর্যসেন, তিতুমির আর অগ্নিবীণার।

অকুতোভয় বঙ্গবন্ধু মুক্তচিত্ত অটল দীপ্ত,

বজ্রকণ্ঠে মুক্তির দিশা, স্বাধীনতার জন্য ক্ষিপ্ত।

যে রোদ্দুরে দস্যি ছেলে তেপান্তরে উড়ায় ঘুড়ি,

অবাক চোখে তাকিয়ে দ্যাখে, মুক্ত ডানার উড়াউড়ি,

সে কি জানে লাল-সবুজের এগিয়ে চলার বিজয় গাঁথা,

তার বুকে কি মেলছে ডানা লাল-সবুজের স্বাধীনতা।

দিন কি কেবল বদলে যাওয়া দিন বদলের দিন,

এই আলোতে উদ্ভাসিত বিজয় দীপ্ত স্বাধীনতার ঋণ।

বিজয় আমার

-এ কে আজাদ

বিজয় আমার

পতাকার রং

মানচিত্রের রেখা,

বিজয় আমার

আনন্দ ঘন

ভিটে-মাটি ফিরে দেখা।

বিজয় আমার

স্মৃতির মিনার

সৌধ চূড়ার গান,

বিজয় আমার

স্বাধীন দেশের

সুখভরা অফুরান।

স্বাধীনতা তুমি

-কাজী আবুল কাসেম রতন

স্বাধীনতা তুমি

বাংলা দেশের

বাংলা মায়ের

শুভেচ্ছা।

স্বাধীনতা তুমি

দাদুর মুখে

রূপকথারই

সু-কিচ্ছা

স্বাধীনতা তুমি

সূর্যে ভাষা

রক্তিম হেম।

স্বাধীনতা তুমি

মুক্তি সেনার

মুক্ত প্রেম।

স্বাধীনতা তুমি

উড়ে যাওয়া,

স্বাধীন পাখির

প্রত্যাশা।

স্বাধীনতা তুমি

প্রিয় জনতার

প্রেম প্রীতি জয়

ভালবাসা।

বিজয় দিবস

-মোস্তফা কামাল সোহাগ

ডিসেম্বরের ষোল তারিখ

বিজয় দিবস হয়

এই বিজয়টা ছিনে আনতে

লক্ষ প্রাণ ক্ষয়।

বিজয় দিবস এলে আমরা

দেশের গান গাই

রাজপথে বিজয় মিছিল

দেখে সুখ পাই।

বিজয় দিবসে বিজয় নিশান

দেখে মন ভরে

আনন্দে সব মাতোয়ারা

বাংলা মায়ের ঘরে।

যুদ্ধ করে জীবন দিয়ে

বিজয় আনলো যারা

সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সন্তান

ইতিহাসে তারা।

আলো ও আঁধার

-ফরিদ আহমদ ফরাজী

আঁধার আলো মিশলেই কালো

আলো শুধুই আলো

আঁধারে কে থাকতে চায়?

আলোর প্রদীপ জ্বালো।

হালাল হারাম মিললেই হারাম

হালাল শুধুই হালাল

হালাল কে পছন্দ করেন

আল্লাহ জাল্লি-জালাল।

বিজয় তুমি

-ফরিদ আহমেদ হৃদয়

বিজয় তুমি মুক্ত একটি পাখি

গগন তলে করছ ডাকাডাকি।

বিজয় তুমি গোলাপ জবা ফুল

শীতল জলের নদীর দুটি কুল।

বিজয় তুমি চাষির ফসল মাঠ

মাঠ জুড়ে ফলে ধান, গম আর পাট।

বিজয় তুমি লাল-সবুজ পতাকা

মুক্ত হাওয়ায় উড়ছ আঁকা বাঁকা।

বিজয় তুমি মায়ের মুখের হাসি

যেই হাসিকে সবাই ভালবাসি।

বিজয় তুমি একটি স্বাধীন দেশ

নামটি হলো সোনার বাংলাদেশ।

ষোলই ডিসেম্বরে

-হোসেন মোতালেব

একটি পাখি বাসার আশে

করছে উড়াউড়ি

এ বন থেকে ঐ বনেতে

করছে ঘুরাঘুরি।

অবশেষে বাঁধল বাসা

দীর্ঘ ন’মাস পরে

সেই পাখিটা তুলল ছানা

ষোলই ডিসেম্বরে।

সেই ছানাটি জানান দিল

বিশ্ববাসী শোন

বাংগালী এক বীরের জাতি

নয়তো ভিত কোন।

লক্ষ ভাইয়ের রক্তে কেনা

সবুজ বরণ পাখি

বিশ্ব সভায় সেই পাখিটা

করছে ডাকাডাকি।

সেই পাখিটা দেয় পরিচয়

বাংলাদেশের নামে

কেনা হল সেই পাখিটা

লক্ষ প্রাণের দামে।

 

মানুষ ওজন

-মেজু আহমেদ খান

টাকা ছাড়া হয় না কি ভাই মানুষ ওজন।

টাকাটা তো ক্ষণস্থায়ী সে-ই কি স্বজন?

টাকা ছাড়াও মানুষ ওজন হয়

তাই টাকাটা আমার কাছে সবার আগেই নয়।

টাকা দিয়ে অনেক কিছুই যায় না কেনা ভাই

বিদ্যা বুদ্ধি মান ইজ্জত আর কাম্য অনেকটাই।

মহান বিজয়

বিজয় তুমি ১৬ই ডিসেম্বর, লাখ শহীদের রক্ত মাখা প্রাণ—

বিজয় তুমি শাশ্বত বাংলার সোনালী ফসল-সরষে ফুলের ঘ্রাণ।

বিজয় তুমি সুন্দর বনের চিত্রাহরিণ আর দোয়েল,শ্যামা,টিয়া—

বিজয় তুমি উত্তাল সমুদ্র ঘেরা, সেন্ট মার্টিন-কুতুবদিয়া।

বিজয় তুমি শীতের সকালে শিশির ভেজা ঘাস,

বিজয় তুমি বিশ্বখ্যাত বাংলার সোনালী আঁশ।

বিজয় তুমি জেমসের সোনার বাংলা-আমি তোমায় ভালবাসি,

বিজয় তুমি হায়দার হোসেনের গণতন্ত্রের হাসি।

বিজয় তুমি লাখ শহীদের রক্তভেজা দান,

বিজয় তুমি লাখ বাঙালীর মুক্তি কামী প্রাণ।

বিজয় তুমি জর্জ হ্যারিসানের স্বপ্নের বাংলাদেশ—

বিজয় তুমি লজ্জাবতী পল্লী তরুনীর মেঘবরন কেশ।

বিজয় তুমি বিশ্ব মানচিত্রে নতুন একটা দেশ—

বিজয় তুমি ছিনিয়ে এনেছ সোনার বাংলাদেশ।।

 

মহান বিজয় দিবস

– আবু জাফর বিঃ

মহান বিজয় দিবস ১৬ডিসেম্বর, জাতির অহঙ্কার,

এ বিজয়কে রাখবো সমুন্নত এই হোক অঙ্গিকার।

একাত্তরে সাড়ে সাতকোটি বাঙালি হয়েছিল ঐক্যবদ্ধ,

২৬ মার্চ থেকে শুরু হয় ৯মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ।

ত্রিশ লক্ষ শহীদের বুকের তাজা রক্ত, দিয়ে বিসর্জন,

অবশেষে হানাদার পাকিস্তানবাহিনী করল আত্মসমর্পণ।

সেদিন তারা বাঙালিদের কাছে করেছিল শীর অবনত,

বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠালাভ করেছিল, স্বাধীন সার্বভৌমত্ব।

মুক্তিকামী জনতা প্রায় খালি হাতে, দাঁড়িয়েছিল রুখে,

জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাষান বেঁধে বুকে।

যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা,

ভুলবো না সেই দুঃসাহসী বীরত্বপূর্ণ মুক্তিযোদ্ধাদের কথা।

জীবন উৎসর্গ করে উপহার দিয়েছে লাল-সবুজের পতাকা,

এনেছে ৫৬হাজার বর্গ মাইলের স্বাধীন বাংলার সীমারেখা।

মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের জনগণ;

৪৫বছর পরেও কি করতে পেরেছি তাদের স্বপ্ন পূরণ?

দুর হয়নি বৈষম্য বিভাজন, আসেনি অর্থনৈতিক মুক্তি,

রুখতে হবে সকল বঞ্চনা, সৃষ্টি করতে হবে গণশক্তি।

লাখো শহীদের আত্মত্যাগে অর্জিত আজকের এই বিজয়,

সকলে মিলে গড়বো দেশ, মানবো না কোনো পরাজয়।

 

★ লাল সবুজের স্মৃতি ঘেড়া নিশান আমার উড়ে।

 কিনেছিলাম রক্ত দিয়ে বিজয় ডিসেম্বরে।

 মাগো তোমার চোখের জলে,

 জয় বাংলা ধ্বনি তুলে,

 হাজার ছেলে প্রাণ দিল ঐ নতুন আশার ভোরে।

 রক্ত দিয়ে কেনা এই বিজয় ডিসেম্বরে।

  মাগো তুমি হায়েনা ভয়ে কাঁদছ দেখে তাই।

 তোমার ছেলে ঘর ছেড়েছে তোমায় দিতে ঠাঁই

 বিশ্বমাঝে উচ্চাসনে,

 পাক বাহিনীর নির্যাতনে,

 আর হবেনা শোষন এবার তোমার আপন ঘরে।

 রক্ত দিয়ে কেনা এই বিজয় ডিসেম্বরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button